পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স লিমিটেডের কারখানায় গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির সর্বমোট ঋণের বোঝা রয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সুদসহ আর্থিক দায় প্রায় ৯০০ ও এর বাইরে ২০০ কোটি টাকা অন্যান্য দায় রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে প্রকৌশল খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিটি।
দীন মোহাম্মদ ও মো. আনসার আলীর উদ্যোগে এপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স লিমিটেড যাত্রা করে ১৯৯৪ সালে। সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সুনাম কুড়ালেও এপোলো ইস্পাতের ব্যর্থতার কারণে দীন মোহাম্মদকে বেশ ভুগতে হয়েছে। কোম্পানিটিকে টেনে তুলতে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ ঢেলেও সফল হননি তিনি। উল্টো দিন দিন ঋণের দায় আরো বেড়েছে। ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল দিবাগত রাত ১টায় রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দীন মোহাম্মদ। এ সফল ব্যবসায়ীর মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারীরা এপোলো ইস্পাতের ঋণের বোঝা থেকে পরিত্রাণ পেতে বড় কোনো শিল্প গ্রুপের কাছে কোম্পানিটিকে বিক্রি করে দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি।
সিটি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান দীন মোহাম্মদের নেতৃত্বে এপোলো ইস্পাত ২০১৩ সালে পুঁজিবাজার থেকে ২২০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। লোকসানের জন্য আলোচ্য হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৩১ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৫ পয়সা। ২০১৯ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১৭ টাকা ৩০ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ২০ টাকা ১৯ পয়সায়।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৩ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল এপোলো ইস্পাত। তার আগের হিসাব বছরে ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। এছাড়া ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।