শেয়ারবাজারের ক্রান্তিকালে বাজারকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য সরকার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার ফান্ড চেয়েছে ইনভেস্টম্যান্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। বাজারকে সাপোর্ট দেওয়ার লক্ষ্যে যে ফান্ড চেয়েছে আইসিবি, তার সাথে বিএসইসির পূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম।
বিএসইসির চেয়ারম্যান আজ মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট বলেন, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল হোসেনের সাথে আমার কথা হয়েছে, তিনি বলেছেন এখন পর্যন্তু কোন প্রকার বাধা পড়েনি আবেদনটিতে। আইসিবির ফান্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে যদি কোনো প্রকার সমস্যা হয়, সেখানে বিএসইসি যোগাযোগ করে, কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করবে।
বিএসইসির চেয়্যারম্যান আরও বলেন, শেয়ারবাজারকে ভালো করার লক্ষ্যে যে কোনো ভালো উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে বিএসইসি। তারই আলোকে আইসিবির এই উদ্যোগের সাথে বিএসইসির পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। যেখানেই বিএসইসির সহযোগিতা প্রয়োজন হবে, বিএসইসি সেখানেই পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
বেশ কিছুদিন যাবত শেয়ারবাজারে চলছে ধারাবাহিক পতন। এতে বাজারের প্রতি অনাস্থা দেখা দিয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। তবে বাজার মন্দায় টার্ন নেওয়ায় পেছনে কিছু বড় বিনিয়োগকারী নিজেদের ফান্ড গুছিয়ে সাইড লাইনে অবস্থান করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কিছু বিনিয়োগকারী ফ্লোরে আটকে থাকায় গত এক বছর ধরে অস্থিরতায় ভুগছেন। এমন অস্থির বাজারে ফ্লোর প্রাইসের কারণেও লেনদেন কমে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রায়াত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টম্যান্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) প্রয়োজনীয় তহবিলের অভাবে শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দিতে পারছে না। কারণ ফ্লোরের কারণে আইসিবিও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নিয়ে আটকে আছে। আবার আইসিবির একটা পলিসি হচ্ছে কখনো লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে না। যার কারণে ফান্ড ফ্রি করতে পারছে না। তাই বাজারকে সাপোর্ট দিতে পারছে না। এদিকে দিনের পর দিন বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে।
তাই শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দেওয়ার লক্ষ্যে এই মার্কেটকে স্ট্যাবল করার জন্য এবং বিনিয়োগকারিদের পুঁজি সুরক্ষার জন্য সরকারের কাছে ৫০০০ কোটি টাকার তহবিল চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এটা স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে চাওয়া হয়েছে। এই ঋণ পেলে আইসিবির প্রাইভেট ব্যাংকের ঋণের সুদ পরিশোধের যে চাপ রয়েছে তা কিছুটা পরিশোধ করা যাবে। আবার নতুন করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগও করা যাবে।
এই বিষয়ে আইসিবির ডিএমডি আবু তাহের মোহাম্মদ আহমেদুর রহমান বলেন, আইসিবি থেকে সরকারের কাছে ৫০০০ কোটি টাকার ঋণের আবেদন করা হয়েছে। আবেদনটি সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এখন বিষয়টা মন্ত্রণালয়ের হাতে রয়েছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করছি শেয়ারবাজারের স্বার্থে খুব দ্রুত সময়ে ঋণটি পাওয়া যাবে।
এই বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারকে সার্পোট দেওয়ার লক্ষ্যে যেহেতু এই ফান্ড চাওয়া হয়েছে, তা বাজারের জন্য খুবই ভালো হবে। সরকার আইসিবিকে ফান্ডটি দিলে আমরাও খুশি। তবে যেহেতু ফান্ডটির সাইজ অনেক বড়, তাই একটু দেরি হচ্ছে।
তিনি আরও বরেন, আমরা বিএসইসি থেকে ফান্ডটি দেওয়ার জন্যও বলেছি। কিন্তু কিছুটা দেরি হচ্ছে। আমরা আবারও বিষয়টি নিয়ে বলবো। এর আগেও সরকার শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দেওয়ার লক্ষ্যে ফান্ড দিয়েছিল,আশা করছি এবারও দিবে।