পুঁজিবাজার ডেস্কঃ তালিকাভুক্ত কোম্পানি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের বিরুদ্ধে সম্পদ পুনর্মূল্যায়নে অতিরঞ্জিত করার অভিযোগ রয়েছে, যার তদন্তে দুই মাস আগে বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। এমন অভিযোগ নিষ্পত্তির আগেই কোম্পানিটির রাইট শেয়ারের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে এসইসি। গতকাল কমিশনের নিয়মিত সভায় এ কোম্পানির প্রতি দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো এলাকায় কোম্পানিটি ১ হাজার ১৫০ ডেসিমেল জমি কিনেছিল ১ কোটি ১৩ লাখ টাকায়। কিন্তু ২০১৬ সালে নিরীক্ষক প্রতি ডেসিমেল জমির মূল্য ৪৫ লাখ টাকায় পুনর্মূল্যায়ন করে মোট মূল্য ধরা হয়েছে ৫১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকায়। এসইসি মনে করছে অতিরঞ্জিত করে জমির এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে সোনালী পেপারের শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটি এবং সম্পদ মূল্যে প্রভাবিত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষা করতে আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানিকে নিয়োগ দিয়েছে কমিশন।
বিশেষ নিরীক্ষককে তারাবোতে একই ধরনের জমি সরকারি মৌজা মূল্যের সঙ্গে তুলনা করে সোনালী পেপারের জমি মূল্যায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট জারি করা এসইসির নির্দেশনা মেনে চলতে নিরীক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোম্পানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডস (আইএফআরএস) এবং ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অন অডিটিং (আইএসএ) অনুযায়ী সম্পদ, দায় ও ইক্যুইটিসহ ব্যালেন্স শিট এবং আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত করেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
এদিকে রাইট শেয়ার ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাস ধরেই সোনালী পেপারের শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়তে দেখা গেছে। গত ৮ মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩৪৪ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ ৮৭৬ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। শেয়ার দরবৃদ্ধিকালীন সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আর নিট মুনাফা বাড়াতে পুঁজিবাজারে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে। চলতি হিসাব বছরে কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ২৬ কোটি টাকা, যার প্রায় ৭০ শতাংশই এসেছে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ থেকে। বর্তমানে সোনালী পেপারের পরিশোধিত মূলধন হচ্ছে ২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করতে কোম্পানিটি রাইট শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব দেয়। গতকালের কমিশন সভায় সোনালী পেপারের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ৯ লাখ ৮১ হাজার ৭২৯টি শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ১৭ হাজার ২৯০ টাকা সংগ্রহ করবে। এই অর্থ দিয়ে কোম্পানির মূলধনী যন্ত্রপাতি কেনা হবে।