পুঁজিবাজার রিপোর্টঃ এক বছর পরে ফের উৎপাদনে ফিরছে বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি সামিট পাওয়ার লিমিটেডের একটি কেন্দ্র। আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি না পেলেও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) থেকে মৌখিক সম্মতি পেয়েছে কোম্পানিটি। এরপর গত ২৪ মার্চ বিকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জে ১০২ মেগাওয়াটের কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু করে কোম্পানিটি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানিটি।
এর আগে গত সপ্তাহে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে সামিট পাওয়ারের এ প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ কেনার বিষয়ে অনুমোদন দেয়া হয়। নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্টের ভিত্তিতে দুই বছরের জন্য কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কেনার এ অনুমোদন দেয়া হয়। অর্থাৎ এ প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ না করলে সরকারকে কোনো মূল্য পরিশোধ করতে হবে না।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মার্চ মাসের ৩১ তারিখ কোম্পানিটির ১০২ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর সেগুলো কোম্পানি একে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। সরকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আর বাড়াবে না- এমন সিদ্ধান্ত হলেও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে মেয়াদ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। দীর্ঘ আলোচনা শেষে গত ২৩ মার্চ সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে কেপিসিএলের দুটিসহ মোট পাঁচটি কেন্দ্র থেকে নতুন করে বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দেয়া হয়।
সরকার যদিও ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে নতুন করে বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দিয়েছে, তার পরও সামিটের এই কেন্দ্রের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা।
সামিট পাওয়ার লিমিটেডের এটি ছাড়া আরও ২টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। প্ল্যান্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার এসব কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে আরো ১২ টি কেন্দ্রের উৎপাদন চলমান রয়েছে।
সবশেষ বন্ধ হওয়া ২৪ দশমিক ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যান্টটির নাম মাধবদী পাওয়ার প্ল্যান্ট ইউনিট-২। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সরকারের পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (পিপিএ) বা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ১৫ ডিসেম্বর। ফলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্ল্যান্টটি বন্ধ থাকবে।
এর আগের সামিট পাওয়ার লিমিটেডের শতভাগ মালিকানাধীন কুমিল্লার কুটুম্বপুরের ১৩ দশমিক ৫০ মেগাওয়াটের গ্যাসভিত্তিক চান্দিনা পাওয়ার প্লান্ট ইউনিট-২-এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় উৎপাদন বন্ধ করা হয় প্ল্যান্টটির।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে পাওয়ার প্ল্যান্টের অর্থ পরিশোধ বাবদ ৬৩১ কোটি ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৮১৯ টাকা পাবে সামিট পাওয়ার। কোম্পানিটিকে টাকা দিতে আদালত রায় দিলেও এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছে পল্লী বিদ্যুৎ।