পুঁজিবাজার রিপোর্টঃ সপ্তাহটা যেভাবে শুরু হয়েছিল সুচকে পতন দিয়ে, আর আজ সপ্তাহের শেষটাও হলো পতন দিয়ে। বিনিয়োগকারীদের শংকা আর উদ্বেগ যেন কমছে না কোনভাবেই। আর তাতেই দীর্ঘায়িত হচ্ছে বাজারের সংশোধন।
তবে এই সংশোধনেই আশার আলো দেখছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে সূচকের এই সামান্য ঋণাত্বক অবস্থাকে ঠিক পতন বলা যায় না। বছরের একদম প্রথম দিন থেকে সূচক গত সপ্তাহ পর্যন্ত যে গতিতে বেড়েছে, সে অনুপাতে এই সপ্তাহে বাজার তেমন একটা পড়েনি। তাই একে পতন না বলে সংশোধন বলতে চান তারা।
আনোয়ার সিকিউরিটিজের আজম খানের বলেন, সূচক টানা বাড়লে কিছু সময়ের ব্যবধানে সামান্য পড়তেই পারে। বাজারের ট্রেন্ড যখন প্রচন্ড উর্ধ্বমুখী থাকে তখনও বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতায় মাঝেমাঝেই সূচক পড়ে যায়। এছাড়াও বাজারের টানের সাথে কিছু শেয়ারের দাম বেশি বেড়ে গেলে তার সংশোধন হবে, এটিই বাজারের ধর্ম। সূচক বাড়বে কমবে, এরমধ্যে থেকেই সবাই ব্যবসা করবে।
তার মতে, বিনিয়োগকারিরা ধীরে হলেও লকডাউনের শংকা থেকে বের হয়ে আসছেন। তারই প্রমাণ পাওয়া যায় আজকের লেনদেনে। গতকালের তুলনায় আজ লেনদেন বেড়েছে ১শ কোটি টাকার বেশি। আজ সারাদিনে ১ হাজার ২১৯ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যেখানে গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১১৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার।
এই সপ্তাহের প্রতিটি দিনই সূচক বেড়ে শেষ বেলায় এসে কমেছে, যার ব্যতিক্রম হয়নি আজকেও সপ্তাহের শেষ দিনেও। সপ্তাহের অন্য দিনের মতো করে আজও প্রথম ১৫ মিনিটেই সূচক বেড়ে যায়। এরপর সূচক বেশ কিছুটা কমে যায়। আবার সোয়া ১২টার দিকে ২৮ পয়েন্ট বেড়ে সুচক দিনের সর্বোচ্চ অবস্থানে ৭০৬০ পয়েন্টে পৌছায়। এরপর থেকে সূচক টানা কমতে শুরু করে। ফলে সে সময় আবার পতনের আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সূচক তেমন পড়ে না গিয়ে শেষ বেলায় সমন্বয় করে ৪.৮৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৭০২৭.৫৫ পয়েন্টে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ৩০ ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৬০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৪টির। আর ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সাতটির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে।
এই সাত কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম, ইউনিয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই ফুড, কুইন সাউথ টেক্সটাইল এবং বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকস। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হলেও একপর্যায়ে বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।