পুঁজিবাজার রিপোর্ট: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির(বি,এস,এম,এম,ইউ)কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সেখানে ইমামতির মহান কাজটি করতেন হাফেজ মাওলানা মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম।তিনি শুরু থেকেই সরকারিভাবে নিয়োগকৃত পেশ ইমাম হিসাবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু ২০০১-২০০৫ পর্যন্ত বিএনপি সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবার পর এই প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য দলীয় ভাবে সরকার কর্তৃক মনোনীত হলে প্রথমদিকে একটু নমনীয় থাকলেও ১ বৎসর পরেই শুরু হয় দলীয়করণ, স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতি। ঐ প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকে যারা সরকারি চাকরী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরী নিয়মিত হয়েছেন তাদের উপর শুরু হয় দমননীতি। তারই আলোকে এই পেশ ইমাম সাইফুল ইসলামের প্রতিও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার আঘাত লাগে। ভিসি তাকে চাকুরীচ্যুত করেন।
দীর্ঘদিন কর্মরত পেশ ইমাম সাইফুল ইসলামকে চাকুরিচ্যুত করে তার স্থালে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ হাদীর আপন ভাগিনা আঃ আহাদকে পেশ ইমাম ও খতিব হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। অথচ উক্ত জামে মসজিদে পেশ ইমাম ও খতিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করার মত শিক্ষাগত যোগ্যতা নাই বলেই মৌখিকভাবে তাকে খাদেম হিসাবে দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়। এরপরে তাকে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালনের কথা বলা হলে আঃ আহাদ -তৎকালীন উপাচার্য তার মামাকে বলল যে,আমি মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবো না,ইমাম হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবো।মামাও জানেন ভাগিনার শিক্ষাগত যোগ্যতার খবর।সেই জন্যই উপাচার্য সাহেব নিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রমকে তোয়াক্কা না করে,প্রসাশনকে মৌখিকভাবে বলে দিলেন আমার ভাগিনা ইমাম হিসেবেই থাকবে।তোমরা প্রাতিষ্ঠানিক চাকুরী বিধান বইয়ে উল্লেখিত সনদ পত্র জমা দেও।ইমাম কে হবে এ সিদ্ধান্ত ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী কি বিধান সাবেক উপাচার্য জেনে ভাগিনার নিয়োগপত্রে স্বাক্ষরকৃত চিঠিতে উল্লেখ করলেন, “উপাচার্যের ক্ষমতা বলে তাকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হইল”।যা ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী অবৈধ।অনুরুপ সহকারী পেশ ইমাম মোঃ আমানুল্লাহকে একক ক্ষমতা বলে নিয়োগ দেয়া হয়।নির্বাচনী পরীক্ষার জন্য অনেক অভিজ্ঞ আলিমরা ইমামরা অংশগ্রহন করলেও তাদের চাকুরী হয় নাই।যোগদান করার পর দেখা গেল তিনি সুরা ফাতেহাটাও সহিশুদ্ধ করে পড়তে পারেন না।একক ক্ষমতাবলে পরামর্শ ছাড়াই নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলেই এই নিয়োগ ছিলো অবৈধ।
মুলত ২০০১-২০০৫ সালে বিএনপি সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবার পর এই প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য দলীয় ভাবে সরকার কর্তৃক মনোনীত হলে প্রথমদিকে একটু নমনীয় থাকলেও ১ বৎসর পরেই শুরু হয় দলীয়করণ ,স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতি। প্রতিষ্ঠানটিতে শুরু থেকে যারা সরকারি চাকরী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরী নিয়মিত হয়েছেন তাদের উপর শুরু হয় দমননীতি। তারই আলোকে সাবেক পেশ ইমাম সাইফুল ইসলামের প্রতি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে তাকে চাকুরীচ্যুত করেন।অথচ তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ছোট থাকলেও কয়েকবার পাক আর্মিদের বুলেটের সম্মুখিন হয়েছিলেন।তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী। অথচ তাকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ হাদী তার দূর্নীতি ঢাকতে এবং নিজের লোকজনকে প্রতিষ্ঠিত করতে ইমাম সাইফুলের বিরুদ্ধে কৌশলে মামলা করে হেনস্থা করার চক্রান্ত করেন। মামলায় ঢুকিয়ে দিলেও ইমাম সাহেব আদালত থেকে নির্দোষ প্রমাণীত হন।গত ২৯/০৩/২০০৫ ইং রায়ের কপি সহ তিনি সাসপেন্ড উইথড্র করার জন্য পূনঃবহাল করার আবেদন করেন।০৯/০৪/২০০৫ ইং তার এই উইথড্রর কাগজ অফিস বুঝে রাখেন।৩০/০৫/২০০৫ ইং রায়ের ২ মাস পরে চাকুরী বিধান বইয়ের ধারা উল্লেখ করে শাস্তির কথা হুবহু দোষী সাব্যস্ত করে ইমামকে চাকুরীচ্যুত করেন।চাকুরী বিধান বইয়ে উল্লেখিত ১৫ দিনের মধ্যে আপিল আবেদন জমা দেয়ার কথা আছে।ইমাম সাব ১৫/০৬/২০০৫ ইং আপিলকৃত আবেদন জমা দেন।তখন তাদের বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসলে বিভিন্ন ব্যস্ততা দেখিয়ে আপিলের উত্তর না দিয়েই উপাচার্যের দায়ীত্ব ছেড়ে দেন।এখন পর্যন্ত আপিল পেন্ডিং আছে।আপিলের উত্তর পেতে বিলম্ব হলে ইমাম সাব উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন।সেখান থেকে বিচারপতি তার জাজমেন্টে রেজিস্টার বরাবর পাঠিয়ে দেন।সেখানে উল্লেখ করা হয় পিটিশনারের করা আপিলের উত্তর পাঠান।মিমাংসার পূর্বে উক্ত পদে কোন লোক নিয়োগ করা যাবে না।রেজিস্টার আপিলের উত্তর উচ্চ আদালতে পাঠান নাই বা ইমাম সাবকেও দেন নাই।উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ঐ পদে উপাচার্যের নির্দেশে তার আপন ভাগিনা আঃ আহাদ কে নিয়োগ বিধি না মেনে নিয়োগ প্রদান করে যান।
চারদলীয় জোট সরকারের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে প্রাতিষ্ঠানিক দূর্নীতির রূপরেখা নিরুপন করার জন্য টাস্ক ফোর্স প্রতিষ্ঠিত হয়।উপাচার্যের চলে যাওয়ার পর রেজিস্টার দূর্নীতির ফাইল নিয়ে টাস্ক ফোর্সের সামনে প্রশ্নের উত্তর দিতে অপরাগ হলে সাংবাদিকদের সম্মুখে বলে দিলেন সাবেক ভিসি ডাঃ হাদী পারেন নাই এমন কিছু নাই।নারীকে পুরুষ, পুরুষকে নারি ছাড়া তিনি সবকিছু করতে পারতেন।আঃগফুর।প্রকাশ দৈঃইত্তেফাক পত্রিকা-তাং ১৬/০৮/২০০৭ ইং।
দীর্ঘদিন চাকুরি হারিয়ে এখন ইমাম সাইফুল ইসলাম মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অর্থাভাবে এবং বয়স বেড়ে যাওয়ায় তিনি এখন হতাশাগ্রস্ত হয়ে সবার কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেছেন।একজন আলেম মানুষ তার সাবেক সম্মানটুকু ফিরে পাবার আশায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছেও আবেদন করেছেন।এ পর্যন্ত যারাই উপাচার্যের দায়ীত্বে ছিলেন সবার কাছেই তিনি গেছেন কিন্তু কেউই এ ব্যাপারে একটা সমাধান খুজে বের করতে পারেননি।
চারদলীয় জোট কর্তৃক উপাচার্যের একক ক্ষমতা বলে নিয়গকৃত পেশ ইমাম ও সহকারী পেশ ইমাম এদের প্রতি শুরু থেকেই মুসল্লিদের অসন্তষ্টি বিরাজ করছিলো।বারবার তারা উপাচার্যের লিখিত নির্দেশ লঙ্ঘন করে আসছিল।মুসল্লিদের মাঝে বিরক্তি পূর্ণ মনোভাব নিয়ে অনেক মুসল্লি আসে পাশে মসজিদে চলে যান বা কেহ সুবিধামত যার যার কামড়ায় বসে নামায আদায় করেন।আবার কেহ মসজিদে গিয়ে আত্মতৃপ্তির সাথে নামাজ আদায় করতে না পারায় কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হোন।এভাবেই চলতে থাকে। এ পর্যন্ত যারা উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন যিনি প্রথম তার রেজিস্টার ছিল আঃ গফুর তিনি ছিলেন এই ইমামদের নিয়োগ কালের রেজিস্টার দুর্নীতির দোষর। পরবর্তী উপাচার্যের আত্নীয় ও এলাকার হিসেবে তাদেরকে কিছুই বলেন নাই।
বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া বাবু জাতির পিতার নামে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সম্মান রক্ষার্থে মুসল্লিদের বারবার আবেদন মূল্যায়ন করে বাস্তব পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করলেন। তিনি নির্দেশ করলেন রেজিস্টারকে যে,ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক বরাবর এইভাবে একখানা চিঠি প্রেরণ করুন যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব এবং এদের বিশুদ্ধ কুরআন তেলাওয়াত তাফসীর সম্পর্কে জ্ঞান বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের জন্য গঠিত কমিটিতে তিনি মনোনয়ন প্রসঙ্গে পাঠানো চিঠির সূত্রঃ-বি,এ্স,এ্ম,এ্ম,ইউ ২০১৯/ ১১৯৬, তারিখ ০৫/০২/২০১৯খ্রিঃ।ঐ চিঠির আলোকে ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক ৩ জন আলিম নির্বাচিত করে চিঠি পাঠান।১/ পেশ ইমাম ভারপ্রাপ্ত খতিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ ,২/মুফাসসির ইঃ ফাঃ ৩/সহকারী পরিচালক ইঃ ফাঃ। এ ব্যাপারে গঠিত কমিটিতে ছিলেন ১/পরিচালক হাসপাতাল (সভাপতি)২/উপ-রেরিস্টার আঃ আলিম ৩/প্রফেসর আঃ রহীম মিয়া(সভাপতি মসজিদ কমিটি)(সদস্য) ৪/ প্রফেসর মনিরুজ্জামান খান(সেক্রেটারি মসজিদ কমিটির) (সদস্য)। অত্র কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ০৫/০৫/২০১৯ এই ইমামদের পরীক্ষা নেয়ার জন্য ইমামদেরকে এবং বিজ্ঞ আলেমদের কে পরিচালক হাসপাতালে অফিস কক্ষে উপস্থিত হওয়ার জন্য চিঠি পাঠান।
সম্মানিত পরীক্ষার্থীগণ উপস্থিত হয়ে কমিটির সদস্যদের সম্মুখে দুর্নীতির মাধ্যমে ২০০১-২০০৫ ইং নিয়োগকৃত ইমামদের এক এক করে পরীক্ষকগন প্রশ্ন করেন। পরীক্ষা শেষে কমিটির সদস্যদের প্রতি লক্ষ করে পরীক্ষকগণ বলেন, এই ইমামগণ মসজিদের জন্য অযোগ্য।তাদেরকে অন্য কোথাও কাজে লাগাতে পারেন। এত সময় মুসল্লিদের কষ্ট দেওয়া ঠিক হয় নাই। স্টাফ মুসল্লিদের দাবি আজ পর্যন্ত কেন এই কমিটি কর্তৃক পরীক্ষকদের দেয়া রিপোর্ট উপাচার্য অফিসে পৌঁছানো হলো না? কেনই বা আজ পর্যন্ত এই ইমামরা বহাল তবিয়তে আছে,কেন তাদের অন্যত্র সরানো হয় নাই।মুসল্লীরা জানতে চায় কোন শক্তি এই ইমামদের সুপারিশ করছে।তাদের দাবি অনতিবিলম্বে সাবেক পেশ খতিব হাঃ মাওঃ মোঃ সাইফুল ইসলামকে পূনঃবহাল করা হোক।এবং সহকারী ইমাম নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেশ করা হোক।