পুঁজিবাজার রিপোর্ট: সঠিক ছন্দে ফিরছে না পুঁজিবাজার। আজ বড় মূলধনি হিসেবে জ্বালানি খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির দরবৃদ্ধি ঘটলেও আর্থিক, প্রকৌশল ও বস্ত্র খাতের কারণে সূচকে ডিএসইর প্রধান সূচকে প্রায় ২০ পয়েন্টের পতন ঘটেছে। দীর্ঘদিন থেকে পুঁজিবাজারে চলছে নাজুক পরিস্থিতি। বছরের শুরু থেকেই এই পরিস্থিতি বিদ্যমান। মাঝেমধ্যে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। বেশিরভাগ সময় বাজার খারাপ পরিস্থিতি পার করেছে। মূলত বর্তমানে অর্থের পরিমাণ আসা কমে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক বাজার চিত্রে। এ থেকে উত্তরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সঠিক পদক্ষেপ না নিলে বাজার দীর্ঘমেয়াদি মন্দায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে বিশেষ করে চীনা ফান্ডের অর্থ বাজারে এলে বিনিয়োগকারীরা মানসিকভাবে চাঙা হবেন। এতে ছন্দে না থাকা পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
তারা বলছেন, সম্প্রতি বাজার মূলধন কমে গেলেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভালো প্রবৃদ্ধি আছে। এছাড়াও বাকি খাতগুলোর কিছু কিছু কোম্পানি ভালো করছে। এসব কোম্পানিতে আগ্রহ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। তবে পুঁজিবাজারে যতগুলো কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তার মধ্যে ব্যাংক খাতটি সবচেয়ে শক্তিশালী। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ব্যাংকগুলোর ভালো গতিশীলতা দেখা গিয়েছিল। সম্প্রতি ব্যাংকগুলো তেমন ভালো করছে না। বরং এ খাতে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। কাজেই প্রথমত অবশ্যই মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার কিনতে হবে। দ্বিতীয়ত কোম্পানিটির শেয়ার যৌক্তিক দামে আছে কি না সেটা বিবেচনায় নিতে হবে।
এদিকে, আজকের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫৪৩৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১২৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৯২২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৩৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৮টির, কমেছে ২২৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫২টির। এগুলোর ওপর ভর করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ৮০১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে ৭৩ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৮০১ কোটি ২১ লাখ টাকার।
অন্যদিকে, দিনশেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ৫৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৭৮২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৪০টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৮টির, কমেছে ১৫৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
বাজার সংশ্লিষ্ট-ব্যক্তিরা বলছেন, একজন বিনিয়োগকারী কীভাবে ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনবেন, সেক্ষেত্রে তাকে বেশ কিছু বিষয়ে নজর রাখতে হবে। প্রথমত, বাজার সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান থাকতে হবে। যে কোম্পানিটির শেয়ার কিনবেন, তার পিই রেশিও কত, ইপিএস কত, এনএভি কত, লভ্যাংশ দেওয়ার ইতিহাস কেমন, মৌলভিত্তির কি না, কোম্পানিটি কি কি পণ্য উৎপাদন করে, পণ্যের চাহিদা কেমন, উৎপাদিত পণ্যগুলো কোথায় বিক্রি করা হয় প্রভৃতি বিষয়ে জানতে হবে। এর পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় রয়েছে, সেগুলোর প্রতিও নজর রাখতে হবে। কারণ পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকাতর ও টেকনিক্যাল এনালাইসিসের জায়গা। কারণ এখানে অনেক ধরনের বিষয় কাজ করে। তাই বাজারে বিনিয়োগের সময় অনেক সতর্ক থাকতে হয়। তা না হলে বড় ধরনের লোকসানের ঝুঁকি থাকে বলেও ধারনা তাদের।